ব্রয়লার মুরগির মাংসের ৫টি ক্ষতিকর তথ্য জেনে নিন

ব্রয়লার মুরগী হলো এমন এক ধরণের মুরগী যার মাংস খুব সুস্বাদু ও নরম। এদের ওজন ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যেই প্রায়ি দেড় কেজি থেকে দু কেজি হয়। ব্রয়লারের মুরগীর মধ্যেও আবার বিভিন্ন ধরণের ভাগ রয়েছে যেমন হাইব্রিড ব্রয়লার, লেয়ার মুরগী ইত্যাদি। এগুলা আবার বিভিন্ন জাত ভেদে নির্বাচন করা হয় কোনটি কি মুরগী? কেননা যেগুলা ব্রয়লারের মুরগী সেগুলো সংরক্ষনের আগে আমাদের বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে। কেননা সব মুরগী একসাথে বেড়ে উঠে না। তাই ব্রয়লারের মুরগী একসাথে বেড়ে উঠার জন্যে আগে ছাটাই করে বাচ্চা নির্বাচন করতে হয়। অন্যদিকে লেয়ার মুরগীর ক্ষেত্রে মুরগীগুলোকে বাচাই করা হয় ডিম সংরক্ষন করার জন্যে। লেয়ার মুরগীগুলোকে ১দিন বয়স থেকে ডিম সংরক্ষণ এর জন্যে খাবার দেয়া হয়। আর ১৮ থেকে ১৯ সপ্তাহের মধ্যেই এরা ডিম দেয়া শুরু করে। গড়ে হিসাব করলে দেখা যায় এরা এক কেজি ডিম দেয়ার জন্যে প্রায়ি সোয়া ২কেজির মতো খাদ্য গ্রহণ করে। যে মুরগী গুলা আকারে ছোট আর খাবার ও কম গ্রহণ করে তারাই মূলত সাদা ডিম দিয়ে থাকে। আরে যেগুলা আকারে বড় আর খাদ্যের পরিমাণ ও বেশি তারা সোনালী ডিম দিয়ে থাকে। অর্থাৎ ডিমের ক্ষেত্রেও লেয়ার মুরগী দু ধরণের জাত নির্ধারণ করা হয়।

এবার আসুন জেনে নেই ব্রয়লারের মুরগী মানবদেহের জন্যে কতোটা অপকারী

১।আমরা যারা একটু আমিষ খাদ্য প্রিয় মানুষ অথবা শরীরে আমিষের ঘাটতি পূরণের জন্যে কিন্তু আমরা মাছ মাংস খেয়ে থাকি। ছোট বড় প্রায়ি সকলের প্রিয় এই ব্রয়লারের মুরগী কেননা মাংস নরম ও সুস্বাদু। কিন্তু এইগুলা পোল্ট্রিতে বড় করার এগুলোকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে বড় করা হয় যার ফলে এগুলা অতিরিক্ত খেলে আমাদের শরীরে যে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টন্স থাকে তা কমতে থাকে। তাই যাদের দিনের ৩বার খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা অন্তত দিনে ১বার করে খাবেন।

ব্রয়লার মুরগির ক্ষতি

২।পোল্ট্রিতে যেভাবে মুরগী বড় করা হয় সেগুলা কোনোটাতেই বিজ্ঞান সম্মত ভাবে নয়। কেমিকেল পদ্ধতিতে বড় করা হয়। কেমিকেল পদ্ধতিতে কতগুলো ওষুধ দিয়ে অল্প দিনে মুরগীর স্বাস্থ্যকে ভারী ও বড় করা হয়। তাই যাদের বিভিন্ন রোগের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত এই ব্রয়লারের মুরগীকে পরিহার করা। কেননা এগুলা ওষুধের গুণাগুণ মান কমিয় দেয়।

ব্রয়লারের মুরগী

৩।গবেষণার দেখা গেছে ব্রয়লারের মুরগীতে ৬৭% ই–কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা থেকে আমাদের ফুড পয়জনিং সমস্যা টা বেশি দেখা দেয়। বাচ্চা এমনকি যেকোনো বয়সের মানুষের এই সমস্যা হয়। সাধারণত বাইরে আমরা তেলেভাজা এই সব ব্রয়লারের মুরগীর বিভিন্ন ধরণের খাবার খেয়ে থাকি। আর ফুড পয়জনিং হওয়ার এটাই মূল কারণ।

ব্রয়লার মুরগির ক্ষতিকর দিক

৪।যাদের কোলেস্টেরল এর সমস্যা রয়েছে এই ব্রয়লারের মুরগীর দীর্ঘদীন খাওয়ার ফলে রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে যায়। শুধু কোলেস্টেরল না শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, সর্দি কাশি, পেটের বিভিন্ন সমস্যা গ্যাস, অম্বল ইত্যাদি ইনফেকশন বেশি হয়। তাই দিনের ৩বার করে যাদের চিকেন খাওয়ার অভ্যাস তারা এই অভ্যাস পরিহার করুন।

মুরগির মাংসের অপকারিতা

৫।ব্রয়লারের কাঁচা মাংসে প্রচুর পরিমাণের ব্যাকটেরিয়া থাকে। আমরা মনে করি মুরগী জবাই করে দেয়ার পর ব্যাক্টেরিয়া মরে যায় কিন্তু এতে করে পাশে যে মুরগীগুলা থাকে তা থেকে ব্যাকটেরিয়া গুলো কাঁচা মাংসে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। আর মাংস থেকে জীবাণুগুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করা টা সহজ হয়ে যায়। তাই অনেকে মতামত দিয়ে থাকেন ফুটন্ত গরম পানিতে কাঁচা মাংসকে পরিষ্কার করা।

ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা

উপরের প্রত্যেক্টি ধাপে আমরা লক্ষ্য করে দেখলাম ব্রয়লারের মুরগীতে আমাদের দেহে উপকারের চেয়েও অপকারিতা বেশি। অর্থাৎ ব্রয়লারের মুরগী আমাদের যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। শরীরের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।