ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা করার সহজ উপায় । ফর্সা হওয়ার উপায়

বেশিরভাগ নারী রা-ই যেন কমবেশি রূপচর্চা নিয়ে শৌখিন। কিন্তু সময় এবং উপকরণ-এর অভাবে অনেকেরই যেন সঠিক ভাবে ত্বক-এর যত্ন নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে-না। তার উপর সঠিক উপায়ে ঘরে বসে ত্বক এর যত্ন নেয়া যেন খুব কঠিন একটা কাজ। স্বাস্থ্যকর ত্বক পেতে প্রতিদিন-এর রূপচর্চায় ফেইসপ্যাক বা মাস্ক অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। এই মাস্ক বা ফেইসপ্যাক ত্বক এর যে কোনো সমস্যা দূর করতে নিখুঁত ভূমিকা রাখে। সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার আপনার ত্বকের যত্ন নিন। তাই আজ আমরা আলোচনা করবো, কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়।

রূপচর্চায় ঘরোয়া টিপস

ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করতেঃ

 রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফেইস প্যাক ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়।

প্যাক ১ঃ 

টমেটো এবং নারিকেল তেল ব্যবহার করে আমরা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারি। 

যা যা লাগবেঃ

এক চামচ টমেটোর জুস, দুই চামচ নারিকেলের দুধ।

মুখের যত্নে ঘরোয়া টিপস

পদ্ধতিঃ 

দু’চামচ নারিকেলের দুধের সাথে এক চামচ টমেটোর জুস মিশিয়ে নিন এবং রাতারাতি ফলাফল পেতে এটি ফেইস-মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন। এবার ঘুমোতে যাওয়ার আগে, একটি ফেইসপ্যাক লাগানোর ব্রাশের সাহায্যে ত্বকের উপর হালকাভাবে একটি স্তর লাগিয়ে নিন এবং ঘুমিয়ে পড়ুন। সকালে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং রাতারাতি

এর প্রভাব অনুভূত করুন।

টমেটোতে রয়েছে ফ্রুট-এসিড এবং নারিকেলের দুধ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ত্বক পরিষ্কার রাখতে খুবই উপকারী একটি উপাদান।

প্যাক ২ঃ

ত্বকের যত্নে টক- দই খুব উপকারী একটি উপাদান। টক দই-য়ে উপস্থিত ল্যাকটিক

অ্যাসিড হচ্ছে প্রাকৃতিক আলফা-হাইড্রোক্সিল নামক এক ধরনের অ্যাসিড,

যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অপরদিকে হলুদের রয়েছে কারকিউমিন নামক

একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান, যা আন্টি মেলানোজেনিক এর প্রভাবে

ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করে এবং উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।

যা যা লাগবেঃ

2 চা চামচ টক দই এবং ১/৪ চামচ হলুদ।

হলুদের ফেসপ্যাক

পদ্ধতিঃ

চা চামচ টক দই এর সাথে ১/৪ চা চামচ হলুদ মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এবার এটি ১৫ মিনিটের জন্য রেখে তারপর

মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ত্বক টানটান রাখতেঃ

বয়স বাড়ার কারণে এবং অতিরিক্ত স্বাস্থ্যবান হওয়ার কারণে অনেক সময় আমাদের ত্বক ঝুলে যায়। 

বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরিকৃত তেল ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বক টানটান রাখা যায়।

এছাড়াও কিছু ফেসপ্যাক ব্যবহারের মাধ্যমেও আমরা ত্বক টানটান রাখতে পারি।

(১) আলমন্ড অয়েল

আলমন্ড ওয়েল প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ  এবং ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধি করে। এটি খুব দারুণ ভাবে ত্বকের ঝুলানো রোধ করে এবং ত্বক টানটান রাখে।

ত্বক কোমল করার উপায়

যা করতে হবেঃ

গোসল করার আগে পুরো শরীরে বা মুখে ২০ মিনিটের জন্য আলমন্ড অয়েল মাসাজ করুন। এরপর গোসল করে নিন।

(২) সরিষার তেলঃ সরিষার তেল ত্বককে টানটান

রাখে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। সরিষার তেলে উপস্থিত উচ্চমাত্রার ভিটামিন

ই ত্বকের ঝোলানো ভাব রোধ করে।

যা প্রয়োজনঃ সরিষার তেল। 

১. সরিষার তেল  চুলায় কুসুম বা হালকা গরম করে নিন। 

২. গোসল করার পূর্বে গরম করা তেলটি মুখের ত্বকে কিংবা পুরো শরীরে মাসাজ করুন। এ সময় ত্বকের নিচ থেকে উপরের দিকে

আলতোভাবে ৫ মিনিট সময় নিয়ে মাসাজ করতে থাকুন। পর গোসল করে ফেলুন।

সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার ত্বক টানটান রাখতে এই তেল ব্যবহার করুন।

ত্বকে সরিষার তেল ব্যবহার

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

সরিষার তেল অনেকসময় ত্বকে

জ্বলন সৃষ্টি করতে পারে,

তাই মাসাজ করার পূর্বে ত্বকের উপর হালকা ভাবে প্যাচ টেস্ট করে নিন।

(৩) নারিকেল তেল

নারিকেল তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বক পরিষ্কার করে এবং ত্বকের কোষগুলোকে সতেজ করে তোলে। এটি ত্বক সতেজ ও সজীব রাখে এবং ত্বকের পুষ্টি সাধন করে। এর ভেতরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ভেতর লুকিয়ে থাকা রেডিক্যাল গুলো শোষণ করে নেয় এবং ত্বক টানটান রাখে। ‌

যাপ্রয়োজনঃ

এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল।

১. রাতে  ঘুমোতে যাওয়ার আগে ত্বকের নিচ থেকে

উপরের দিকে ৫-১০ মিনিটের জন্যে আলতোভাবে বৃত্তাকার গতিতে মাসাজ

করুন।

২. ভালো ফলাফল পেতে হলে সারারাত রেখে সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন।

প্রতিদিন কমপক্ষে একবার এই তেল দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করতে পারেন।

এছাড়া প্রতিদিন নিয়মিত দুইবার করে ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিস্কার রাখুন এবং সপ্তাহে ২ বার করে ফেইস প্যাক লাগান। আর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। তাহলেই আপনার ত্বক হয়ে উঠবে সতেজ ও সজীব এবং স্বাস্থ্যকর।