বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথেই বিভিন্ন কারণে আমাদের ত্বকে মেছতা এবং মেছতার দাগের উপদ্রব অনেক বেড়ে যায়।
আমাদের ত্বকে মেছতার দাগ রীতিমতো বিব্রতকর এবং সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত একটি বিষয় এবং ত্বকে মেছতা এবং মেছতার দাগ অত্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে রয়ে যায় ।
যার ফলে ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য মেছতার দাগ সম্পূর্ণরূপে বিকৃত করে দেয় ।
তাই সুপ্রিয় বন্ধুরা আপনাদের জন্য শেয়ার করছি চিরতরে মুখের ত্বক থেকে মেছতা এবং মেছতার দাগ দূর করার অত্যন্ত কার্যকরী উপায়।
তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক, চিরতরে মুখ থেকে মেছতার দাগ এবং মেছতা দূর করার উপায়।
মুখ থেকে মেছতা এবং মেছতার দাগ দূর করার পদ্ধতিঃ
মুখ থেকে চিরতরে মেছতার দাগ এবং মেছতা দূর করার জন্য প্রথমেই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান এর সাহায্যে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে হবে।
মেছতার দাগ দূর করতে ফেসপ্যাক এ ব্যবহৃত উপাদানঃ
১ টেবিল-চামচ চন্দনের গুঁড়া।
১ চামচ লেবুর রস
১ ভিটামিন ই ক্যাপসুল
পরিমাণমতো গোলাপজল।
মেছতা এবং মেছতার দাগ দূর করতে ফেসপ্যাক তৈরির প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে একটি লেবু পরিষ্কার করে কেটে নিয়ে রস বের করে নিন।
একটি ছোট পরিষ্কার পাত্রে চন্দনের গুঁড়া, লেবুর রস এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
মিশ্রণটির সাথে পরিমাণমতো গোলাপজল দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন।
পেস্ট অতিরিক্ত পাতলা করে ফেলবেন না। ঘন রাখবেন ।
মেছতার দাগ দূর করতে ফেসপ্যাকটি ত্বকে ব্যবহার প্রক্রিয়াঃ
মেছতা এবং মেছতার দাগ চিরতরে দূর করতে ফেসপ্যাকটি কয়েকটি ধাপে ব্যবহার করতে হবে।
ধাপ ১..
প্রথমে আপনার ত্বক পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
অথবা কুসুম গরম জলে তুলা ভিজিয়ে মুখ ভালোভাবে মুছে নিন।
ধাপ ২..
একটি লেবু স্লাইস করে কেটে নিন।
লেবুর কাঁটা অংশের ওপর এক চা-চামচ মধু দিয়ে মুখে মেছতার দাগে এবং সম্পূর্ণ মুখে ভালভাবে ৩ মিনিট স্ক্রাব করে নিন।
তিন মিনিটপর মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
ধাপ ৩..
পরিষ্কার হাত অথবা ব্রাশের সাহায্যে ফেসপ্যাক মুখে ভালভাবে লাগিয়ে নিন।
প্যাকটি লাগিয়ে ৫ থেকে ৭ মিনিট মুখে এবং মেছতার দাগের অংশে ভালোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন।
এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন যেন প্যাকটি মুখের উপর পুরুপুরি শুকিয়ে যায় ।
প্যাকটি শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
চিরতরে মেছতা এবং মেছতার দাগ দূর করতে ফেসপ্যাকটি কার্যকরী হওয়ার কারণঃ
চন্দন পাউডারঃ
চন্দন পাউডার এর এন্টি এজিং এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ত্বক থেকে মেছতা এবং মেছতার দাগ সহ বিভিন্ন ধরনের দাগ চিরতরে দূর করতে সাহায্য করে।
চন্দনের নির্যাস তাকে গভীর থেকে উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তোলে।
লেবুঃ
প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে লেবু অত্যন্ত কার্যকরী । লেবুতে বিদ্যামান প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ই এবং এসিটিক এসিড ত্বকে মেছতার দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করে দিয়ে চিরতরে মুখ থেকে মেছতা এবং মেছতার দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ইঃ
গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন ই খেলে শরীর এবং ত্বকের জন্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি ত্বকে ভিটামিন-ই বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
বিশেষ করে ত্বকের কোষের শক্তি যোগাতে, ব্রণের দাগ, মেছতার দাগ এবং মেছতা দূর করতে ভিটামিন ই সাহায্য করে।
গোলাপজলঃ
গোলাপজলে বিদ্যমান বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বক কে সতেজ এবং দাগ মুক্ত রাখে। তোকে হাই পিগমেন্টেশন দূর করে রোদে পুড়ে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তাই মেছতা এবং মেছতার দাগ চিরতরে দূর হয়।
নোটঃ
1.. উপরে ব্যবহৃত কোন উপকরণ ত্বকের জন্য এলার্জিক হলে তার ব্যবহার করবেন না।
2.. রোদে বের হবার সময় ছাতা অথবা ক্যাপ ব্যবহার করবেন।
3.. ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর ত্বক অবশ্যই ময়েশ্চারাইজ করে নিবেন।
4.. যাদের ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল ( সেনসেটিভ ) তারা (ধাপ, ২) এ লেবুর পরিবর্তে অর্ধেক পাকা টমেটো ব্যবহার করবেন।
দ্রুত সময়ে মেছতা এবং মেছতার দাগ দূর করতে সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারবার ফেসপ্যাকটি উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ব্যবহার করবেন। দাগমুক্ত সুন্দর ত্বকের অধিকারী হন।