মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা

মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা

“মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়” সেটা আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসতেছি। আসলে কথাটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সে বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে একটু আলোচনা করব। 

মিষ্টি সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণাঃ

বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান আমাদেরকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, যেখানে মিষ্টির কথা শুনলে সবার নাক কুঁচকে যায়। মিষ্টি মানেই হলো আমাদের শত্রু এমন একটা অবস্থা বর্তমান সমাজে তৈরি হয়ে গেছে।

কিন্তু একটা সময় ছিল যে কোন খুশির খবরে, অনুষ্ঠানে মিষ্টি ছাড়া যেন কোন কিছু কল্পনা করা যায় না। 

আসলেই কি মিষ্টি আমাদের জন্য ক্ষতিকর!!!! নাকি উপকারী????

মিষ্টি আমাদের জন্য কতটুকু উপকারী এবং কতটুকু ক্ষতিকর সেই বিষয় নিয়ে একটু বিশদভাবে আলোচনা করতে যাচ্ছি। যারা মিষ্টি বেশি ভালবাসেন তারা অবশ্যই এই লিখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

ডায়াবেটিসের জন্য মিষ্টি কতটা উপকারীঃ

আমাদের সবার ধারণা মিষ্টি বেশি খেলে ডায়াবেটিস হয়। আসলে এটা একটা ভান্ত ধারণা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর কোনো ভিত্তি নেই। কিন্তু এ কথা বলা যায় যাদের শরীরে সুগারের পরিমাণ বেড়ে গেছে, ইনসুলিন উৎপাদনের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, তারা অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি সেবন করা থেকে দূরে থাকবেন। 

লোজান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর লুক টাপি বলেছেন, অতিরিক্ত ক্যালোরি বেড়ে গেলে শরীরের ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু মিষ্টি শুধুমাত্র ক্যালোরির একটা অংশ মাত্র। মিষ্টি না খেয়েও আপনার ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়তে পারে।

হঠাৎ করে যাদের ডায়াবেটিকস লো হয়ে যায় বা ডায়াবেটিসের মাত্রা ৪.৫ এর নিচে চলে আসে তাদের কিন্তু সাথে সাথে মিষ্টি জাতীয় কোনো কিছু খাইয়ে দিতে হয়। না হলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। সুতরাং এর থেকে বলা যায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মিষ্টির  কিন্তু ভূমিকা অনেক।

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে মিষ্টির ভূমিকাঃ

অনেকে মনে করেন মিষ্টি খাওয়ার কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়ে যায়। কিন্তু বর্তমান আধুনিক গবেষণায় এর পক্ষে কোন মতামত পাওয়া যায়নি। বরং বলা হয়েছে আমাদের স্নায়ুতান্ত্রিক যে দুর্বলতা থাকে তা অনেকখানি উজ্জীবিত হয় যদি আমরা মিষ্টিজাতীয় কোন কিছু খায়। সেটা হতে পারে মিষ্টিজাতীয় চকলেট, সন্দেশ বা মিষ্টিজাতীয় যেকোনো ফল। 

বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে মিষ্টির উপকারিতাঃ  

অনেক সময় দেখা যায় বয়স বেশি হওয়ার কারণে একটু কাজ করলে অনেকের দুর্বল লাগে। বা কোন কিছু মনে রাখতে পারে না। এক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, যদি আপনারা খাবারের সাথে সাথে প্রতিদিন অল্প একটু মিষ্টি জাতীয় খাবার খান, তাহলে সেটি আপনাদের শরীরে এনার্জি ফিরিয়ে আনতে এবং কোন কিছু ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কে অনেক বেশি হ্রাস করে। তাই বয়স্কদের ক্ষেত্রে মিষ্টি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে। 

সুষম খাদ্যের ভারসাম্য রক্ষা করতে মিষ্টির উপকারিতাঃ  

বন্ধুরা, আমাদের শরীরে সুষম খাদ্যের ভারসাম্য রক্ষা করা উচিত। সে ক্ষেত্রে যদি আমরা মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দিই তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। 

বর্তমানে মিষ্টিজাতীয় খাবার নিয়ে যে পরিমাণ যুক্তিতর্ক চলছে, তাতে কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য খুব একটা উপকার হচ্ছে না। কারণ কিছু গবেষণায় বলা হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় খাবার শরীরের উপকার করে থাকে। আবার কিছু গবেষণায় বলা হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় খাবার শরীরের অপকার করে থাকে। 

তাই আমরা যথা উপযুক্ত সঠিক উৎস থেকে যাচাই করে আমাদের উপকার অনুযায়ী আমরা মিষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণ করব।