মাত্র ৭ দিনে গর্ভকালীন পেটের ফাটা দাগ সহ শরীরের যেকোনো ফাটা দাগ দূর করার উপায়

মাতৃত্বকালীন দাগ একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। যে সকল মেয়েরা গর্ভধারণ করে তাদের পেটের চামড়া  পেটের চাপের কারণে ফেটে যায় এবং এটা বাচ্চা হবার পরেও থেকে যায়।

গর্ভ অবস্থায় এই ধরনের দাগ হওয়া অনিবার্য। ক্রমবর্ধমান পেটের বৃদ্ধির  জন্য জায়গা তৈরি করতে জরায়ু বড় হতে থাকে এবং এতে পেটের চারপাশের ত্বক প্রসারিত হয়। ত্বকের এরকম প্রসারণ এর ফলে ত্বকে ফাটল সৃষ্টি হলে সেখানে এক ধরনের সাদা দাগ তৈরি হয়ে যায় এবং ত্বকের কোলাজেন এ ফাটলকে পূর্ণ করতে পারে না।

 যার ফলে লম্বা দাগের সৃষ্টি হয়ে যায়। কিছু হরমোন থাকে যেটা টান পড়লেও যেন ফেটে না যায় তার জন্য কাজ করে। শরীরে সেসব হরমোনের উৎপাদন কম থাকলেও এই দাগ গুলো হয়ে থাকে।

শুধুমাত্র মোটা মানুষের ওপরে বা নারীদেরই পরে তা কিন্তু নয় অনেক হালকা পাতলা মানুষদের ও এ দাগ হতে পারে। পুরুষদেরও হতে পারে এক্ষেত্রে প্রথমে লাল নীল সবশেষে ফাটা দাগ দেখা যায়।

 শিশুর জন্মের আগে অনেক ধরণের দাগ দেখা যায় । তবে এর পিছনে কিছুটা বংশগত কারণ ও থাকতে পারে। শিশু জন্মের আগে গর্ভ কালীন দাগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা  এখন আমরা জানবো কি করে আমরা এই ধরনের দাগ গুলো কমাবো।  অর্থাৎ প্রতিরোধমূলক অবস্থা গ্রহণ করা।ত্বক সুন্দর এবং মোলায়েম দেখাতে এবং গর্ভাবস্থায় যেসকল দাগ দেখা যায় সেগুলো দুর করতে আমাদের যে সকল উপায় অবলম্বন করতে হবে সেগুলো হল শিশু গর্ভে বেড়ে উঠার সাথে সাথে পেটে চারপাশে নিচের দিকে উপরের দিকে চাপ পড়ে বলে জায়গাগুলোতে স্ট্রেচ মার্ক পড়ার প্রবণতা দেখা যায়। তাহলে যেখানে স্ট্রেস হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন স্থানগুলোতে আস্তে আস্তে মালিশ করুন দিনে দুইবার।

মনে রাখবেন খুব বেশি চাপ দেওয়ার প্রয়োজন নেই ধীরে ধীরে মালিশ করুন। শুকিয়ে যাবার পরে গোসলের সময় আস্তে আস্তে ধুয়ে ফেলুন।

ভিটামিন B ও ভিটামিন  K,  ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ত্বকের যত্নে  এসব ভিটামিন সাহায্য করে। এটি কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে।

ভিটামিন সি-এর স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের পুনর্জন্ম হতে সাহায্য করে।

পানি পানি শরীরকে বিষ মুক্ত হতে সাহায্য করে এবং আপনার ত্বকে স্ট্রেসের চাপকে খুব মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই ৬  থেকে ৮  গ্লাস পানি পান করতে হবে।

সাধারণত মনে করা হয় যে গর্ভবতী নারীর ব্যায়াম করা ঠিক নয়।  এবং তারা শুধু বিশ্রাম করবে। কিন্তু এই ধারণাটি একেবারেই ঠিক নয়। গর্ভবতী নারীর ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়াম করলে অভ্যন্তরীণ জন্ম প্রক্রিয়াটি সহজ এবং লেবার পেইন ম্যানেজ করতে সাহায্য করে। ব্যায়াম করলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় থাকে। শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এবং অনেক বেশি অক্সিজেন দহনে সাহায্য করে। অধিক অক্সিজেন ও রক্ত চলাচল ত্বক টানটান হতে সাহায্য করে। যার ফলে ফাটলের সৃষ্টি হয় না।  

হাঁটা, সাঁতার কাটা এই ধরনের ব্যায়াম প্রেগনেন্সির সময় অনায়াসে করা যায়।তবে পেটে চাপ পড়ে বা বেশিক্ষণ দম বন্ধ করে রাখতে হয় এমন ব্যায়ামগুলো প্রেগনেন্সির সময় করা যাবে না। 

এছাড়া প্রেগনেন্সি পরবর্তী পদক্ষেপ গুলো আপনার নিতে হবে, শরীরের প্রেগনেন্সি দাগগুলো কমানোর জন্য এতক্ষণ ধরে যে  উপায়গুলো বললাম সেগুলো হলো গর্ভাবস্থায় সন্তান যখন গর্ভে থাকে।

এখন যেগুলো বলবো সেগুলো সন্তান জন্ম দেওয়ার পরবর্তী উপায়

যে সকল উপায়ে ব্যবহার করলে মাতৃত্বকালীন জন্মদাগ গুলো আপনি খুব সহজে দূর করতে পারবেন, এর জন্য যে সকল উপকরণ গুলো আপনার ব্যবহার করতে হবে্‌

ডিমের সাদা অংশ ঘরে থাকে। প্রতিদিন প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে আমরা সবাই ডিম খেতে পছন্দ করি। ডিমের সাদা অংশ আমাদের নিয়েআলাদা করে ফেলতে হবে।  এখন ডিমের সাদা অংশ গর্ভ জনিত দাগ দূর করার জন্য খুবই ভাল একটি উপাদান। ডিমের অ্যামাইনো এসিড ও প্রোটিন ত্বকে নতুন জীবন দান করতে সক্ষম।  প্রতিদিন গোসলের আগে ডিমের সাদা অংশ কাটা চামচ দিয়ে ভালোভাবে ফেটিয়ে নিয়ে দাগের মাঝে মেকআপ ব্রাশ দিয়ে লাগিয়ে নিতে হবে।  পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

পেট পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিয়ে লাগাতে হবে অলিভ অয়েল। এ পদ্ধতি দুই সপ্তাহ পালন করলে পেটের দাগ চলে যাবে অনেকাংশেই।

 এরপরে যে উপকরণগুলো লাগাতে হবে সেটি হলো লেবু।  ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করার জন্য লেবুর তুলনা মেলা ভার।  লেবু যেহেতু এসিড তাই এর রস যেকোনো দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। 

লেবুর টুকরো করে কেটে নিয়ে পেটের দাগের অংশে লাগিয়ে ভালো মতো করে মাস্যাজ করে নিতে হবে তিন থেকে চার মিনিট।  ম্যাসাজ করার পর ১০  মিনিটের জন্য লেবুর রস পেটে রেখে দিতে হবে। এরপর উষ্ণ পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। লেবুর রসের সাথে খানিকটা শসার রস লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।  মাতৃত্বজনিত দাগ হালকা করার জন্য এটি খুবই কার্যকরী উপাদান।

আলুর রস এই ধরনের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এটি  আমাদেরকে যেভাবে ব্যবহার করতে হবে তা হল, বাজারে পাওয়া যায় এমন বড় আলুর রস খুব ভালো কাজ দেবে। এই কাজে একটি বড় সাইজের আলু নিয়ে চামড়া গুলো আলাদা করে নিয়ে ফেলতে  হবে। এরকম রস নিয়ে লাগাতে হবে এবং শুকিয়ে  গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

মাতৃত্বজনিত দাগ এর জন্য এলোভেরা জেল সরাসরি লাগানো যায়।  একটি অ্যালোভেরার পাতা নিয়ে চামচ পরিমাণ জেল পাতা থেকে তুলে নিয়ে দাগের জায়গায় লাগাতে হবে। ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে সপ্তাহখানেক করলে আপনার দাগ কমে আসবে ইনশাল্লাহ।

বন্ধুরা উপরে যে সকল পরামর্শগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম এই পরামর্শগুলো যদি আপনারা অনুসরণ করেন তাহলে আপনারা খুব সহজেই মাতৃত্বকালীন দাগ দূর করতে পারবেন।