ডায়েট ছাড়া ওজন কমানোর সহজ উপায়

আজকে আমি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি, যে বিষয়টি আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ডাইট বা ব্যায়াম ছাড়াই কিভাবে আপনারা আপনাদের ওজন কমাতে পারেন।কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত খাদ্য অভ্যাস অনেকদিন ধরে অনুসরণ করা খুবই কঠিন ব্যাপার। আবার ব্যায়াম করার সময় বের করাটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় অনেকের জন্য।

ডায়েট প্লান বা খাদ্যভ্যাস ছাড়াও কি ওজন কমানো সম্ভব ??????

“হ্যা অবশ্যই” বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়

তাহলে আসুন দেখি কি কি উপায়ে আপনি ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমাতে পারেন………..।।

ডায়েট ছাড়া ওজন কমানোর উপায়ঃ

প্রথমত……

আপনার রান্নার দক্ষতার উন্নতি করুন।

কিভাবে রান্না করতে হয় এবং খাদ্যগ্রহণ না কমিয়ে ওজন কমানো একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।

যাদের রান্না সম্বন্ধে ব্যাপক জ্ঞান আছে এবং যারা জানেন কিভাবে বিভিন্ন রকমের খাদ্য রান্না করা যায়, তারা সাধারণত অনেক ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য খেয়ে থাকেন।

যাতে থাকে ফলমূল-শাকসবজি ইত্যাদি।

আসলে গবেষকরা বলেছেন, স্থুলতা  এবং রান্নার অপর্যাপ্ত জ্ঞানের মধ্যে একটি যোগসূত্র আছে।

ওজন কমানোর খাবার
ওজন কমানোর খাবার

দ্বিতীয়ত……

বেশি বেশি আমিষ খান।আমিষ স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি মূল্যবান অংশ। এবং এটা শারীরিক মেটাবলিজমের জন্য দরকারি।

প্রোটিন আপনার পেট ভরা  রাখে এবং ক্ষুধা বিলম্বিত করতে সহায়তা করে। অল্প বয়স্ক মহিলাদের নিয়ে একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে,

ওজন কমানোর গল্প
ওজন কমানোর গল্প

তৃতীয়ত ………

বেশি বেশি আঁশযুক্ত খাবার খান। আশ যুক্ত খাবারে আছে ফলমূল,শাকসবজী, কলা এবংহোল গ্রেইন ফাইবার।এগুলো অন্যান্য খাদ্য থেকে আলাদা কারণ আমাদের শরীরে এগুলো ক্ষুদ্রান্তে হজম হয়না। তার পরিবর্তে এগুলো বৃহদান্ত্র চলে যায়।যেখানে ফারমেন্টেশন হয়। এটা আমাদেরকে যেভাবে সাহায্য করে তা হল পেট ভরা রাখে। হজম প্রক্রিয়া বাড়িয়ে ফেলে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

এভাবে আপনি খাদ্যে ফাইবার এর পরিমাণ বাড়াতে পারবেন।

প্রতিদিন ফল খান। প্রচুর শাকসবজি খান। বিভিন্ন শাক সবজির খোসা ফাইবার অনেক উপকারী। খুব ভালোভাবে ধুয়ে রান্না করে খেলে অনেক নিরাপদ।

এক মাসে ৫ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট প্লান
এক মাসে ৫ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট প্লান

চতুরথত……

প্রোবায়োটিক খান। প্রোবায়োটিক হচ্ছে উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা হজমের জন্য খুবই জরুরী।

একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রোবায়োটিক অন্ত্র ও মগজ ভালো রাখে এবং এগুলো ওজন কমাতে সহায়তা করে। আমাদের শরীর এইসব ব্যাকটেরিয়া ভাল কাজ করে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এরা আমাদের যা যা উপকার করে তাহল অন্ত্রের আবরণ শক্ত করে। লিভারের কোষে শক্তি যোগায়।

এগুলোতে আছে ক্যান্সারবিরোধী কিছু ফ্যাটি এসিড।যা শরীরের ওজন ঠিক রাখে। খাদ্যে বেশি পরিমাণে চিনি ও চর্বি থাকলে ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্যতা বদলে দিতে পারে।

পারফেক্ট ডায়েট চার্ট
পারফেক্ট ডায়েট চার্ট

পঞ্চমত………

অপর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজনীয় হরমোনের কাজে বাধা দেয়।  বিশেষ করে যেসব হরমোন মেটাবলিজমের কাজে নিয়োজিত। প্রতিরাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুম  হলে, তা আমাদের স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।

অতিরিক্ত চাপ আমাদের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। যখন একজন মানুষ চাপের মধ্যে থাকে তখন তার শরীরে এক ধরনের হরমোন উৎপন্ন হয়। শরীরে বেশি মাত্রায় হরমোন থাকলে তা ক্ষুধা বাড়ায় যার ফলে শরীরের ওজন বাড়তে পারে।

ওজন অনুযায়ী ডায়েট চার্ট

সবশেষে………  

বেশি পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করুন। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যাদের শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি আছে তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে যেসব সমস্যা হতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিস।

প্রাকৃতিক ভাবে সূর্যের রশ্মি আছে যে সকল খাদ্যে ভিটামিন ডি আছে।

মিষ্টি পানীয় পান করবেন না।

একটি ব্রিটিশ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা শিশুদের মাঝে নিয়মিত মিষ্টি পানীয় যেমন কুক স্প্রাইট পান্তা ইত্যাদি পান করান। এবং শরীরে চর্বি জমা হওয়ার একটি যোগসূত্র দেখতে পায়।

ডায়েট চার্ট বাংলা
ডায়েট চার্ট বাংলা

তাই আমরা মিষ্টি পানির পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন লেবু পানি, আদা পানি পুদিনা পাতার পানি, গ্রিন টি ইত্যাদি পান করবো।

ফলের জুসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। তাই জুসের চেয়ে ফল খেতে চেষ্টা করব।

স্বাস্থ্যকর নাস্তা খাব

২০১৬  সালের এক গবেষণায় দেখা যায় যে এক দল নারী অংশগ্রহণকারীদের  এক-তৃতীয়াংশের শক্তি আসে নাস্তা থেকে।

কিটো ডায়েট খাবার তালিকা
কিটো ডায়েট খাবার তালিকা

স্বাস্থ্যকর নাস্তার মধ্যে রয়েছে শুকনো ফল। যেমন শুকনো খেজুর।  বেশি ফাইবার যুক্ত ফল যেমন আপেল, কল্‌ কমলা ইত্যাদি বেশি ফাইবার যুক্ত সবজি। বাদাম, চিনাবাদাম, খাবার বেশি করে চিবিয়ে খান। খাদ্য বেশি করে চিবিয়ে খেলে তা সহজে হজম হয়।

কিছু গবেষণায় দেখা যায় খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে এবং অনেক সময় ধরে খাদ্য খেলে  খাদ্যের স্বাদ ভালো লাগে এবং এতে ওজন কমে যায়।

খাবার সময় খাদ্যের প্রতি মনোযোগ দিয়ে মনোযোগের সাথে খাদ্যগ্রহণ ওজন নিয়ন্ত্রণের একটি ভালো উপায়।

কিটো ডায়েট কতদিন করতে হয়
কিটো ডায়েট কতদিন করতে হয়

মনোযোগ দিয়ে খাদ্য খাওয়ার জন্য খাবার সময় টেলিভিশন, মোবাইল ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন। টেবিলে বসে খাবার খান। খাদ্যের স্বাদ এর প্রতি মনোযোগ দিন। খেয়াল রাখুন, আপনার পেট ভরে এবং পেট ভরে গেলে খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করুন।

তাহলে বন্ধুরা উপরে যে সকল উপায়গুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম এই সকল উপায় গুলো আপনাদের ফলো করতে খুব বেশি কষ্ট হবে না।

আপনারা যদি এই সকল উপায়গুলো নিয়মিত অনুসরণ করতে পারেন আমরা নিশ্চিত ভাবে আপনাদের বলতে পারি কোন ধরনের ডায়েট প্লান  ছাড়া আপনারা খুব সহজেই আপনাদের শরীরের বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলতে পারবেন।

ধন্যবাদ

Leave a Comment