মাত্র ৭ দিন লাগালেই চুল হবে 20 ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা । চুল দ্রুত লম্বা করার প্রাকৃতিক উপায়

আপনার চুল কি‌ রুক্ষ এবং লম্বায় খুব ছোট? আর চুল পড়াও যেন কমতে চাইছেনা। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব কিভাবে খুব সহজেই চুল পড়া রোধ করা যায় ও চুল লম্বা করা যায়। পাশাপাশি কিভাবে চুলের যত্ন নেওয়া যায় তা নিয়েও আজ আমরা আলোচনা করব।

আসুন প্রথমেই জেনে নেই চুল কেন পড়ে এবং চুলের বৃদ্ধি থেমে থাকে।

“এজেন্সি ফর টক্সিক সাবস্টেন্সেস এন্ড ডিজিজ রেজিস্ট্রি” এর মতে, মেয়েদের চুল প্রতিমাসে গড়ে 1 সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়ে। চুল বৃদ্ধি করতে উভয় জেনেটিক এবং ফলিকলের আকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তার মানে আমাদের চুলের আকার এবং বৃদ্ধি কতটুকু হতে পারে তা এই দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। 1 সেন্টিমিটার চুলের বৃদ্ধি বিষয়টা খুব একটা কম হয়ে গেলো না? তাই-ই তো! আসলে, অপরিপূর্ণ ডায়েট, চুলের সঠিক ভাবে যত্ন নেওয়া, চুলের রুক্ষতা দূর করতে না চাওয়া- এই কারণগুলো চুল রুক্ষ এবং চুল বৃদ্ধি রোধ করে। আবার হরমোনাল ব্যালান্স এর ঘাটতিও চুল বৃদ্ধি রোধের কারণ হিসেবে হিসেবে কাজ করে।

প্রাকৃতিক উপায়ে চুল বৃদ্ধি করার অনেক উপায় আছে। কিন্তু আসুন জেনে ননিই কিভাবে আ‌মরা প্রাকৃতিক উপায়ে চুল বৃদ্ধি করতে পারি।

রাইস

ওয়াটার

চালের পানি

আমাদের মধ্যে অনেকের-ই জানা আছে চাল শুধুমাত্র-ই একটি খাবার। কিন্তু আসলে চাল একটি সৌন্দর্য চর্চার উপাদান। যুগ যুগ ধরে রাইস ওয়াটার বা চালের পানি চুলের যত্নে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এমনকি এর প্রাকৃতিক গুনাগুন চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নানান ভাবে প্রভাব জনক। আগের যুগের সংস্কৃতিহিসেবে চীন, জাপান ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নরী কৃষকেরা চালের পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং চুলের যত্ন নিতেন। চালের পানির ঘনত্বের সঠিক মাত্রা এবং ব্যবহার স্বাস্থ্য কিভাবে চুল লম্বা করতে সাহায্য করে, চুলে এনে দেয় শাইন, আমাদের মাথার তালুর কিউটিকেলস গুলোকে মসৃণ করে এবং চুলের রুক্ষতা রোধ করে।

যা যা লাগবেঃ

১/২ কাপ চাল, ২-৩ কাপ পানি, ৫-১০ ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল।

যেভাবে তৈরী করতে হবেঃ

১. একটি পাত্রে পরিষ্কার করে রাখা চাল নিয়ে তাতে পানি মিশিয়ে নিন। 

২.এবার একটি চামচের সাহায্যে বৃত্তাকার গতিতে এটিকে নাড়ুন। 

৩. পানির ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এটিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিন। যত বেশি এটিকে তাপমাত্রায় রাখবেন, ততই বেশী এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পাবে।

৪. এবার একটি ছাকুনী দিয়ে চাল হতে পানি ছেঁকে ফেলুন এবং এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন।

৫. এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

ডিম ও মধু

স্বাস্থ্যকর চুল পেতে ডিম ও মধুর হেয়ার মাস্কটি অনেক বেশি কার্যকরী এবং বাজেট ফ্রেন্ডলি। এতে রয়েছে কার্যকরী পুষ্টি গুণ, যা আপনার চুলকে করে তোলে স্বাস্থ্যকর এবং চুল বৃদ্ধি করে। 

উপাদানঃ 

একটি ডিমের কুসুম ও ১ চামচ মধু।

যেভাবে বানাবেনঃ‌ 

গোসলের আগে, একটি বোল নিয়ে তাতে ২টি উপকরণ মিশিয়ে ভালো ভাবে নাড়ুন। 

এবার হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে মাথার তালুতে ভালো ভাবে মাসাজ করুন। ১ ঘন্টা‌ অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে কমপক্ষে একবার এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।

অনিয়ন অয়েল

 অনিয়ন‌‌ বা পেঁয়াজ এর গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা সবাই-ই‌ জানি। অনিয়ন অয়েল মাথার তালু এবং চুলকে ময়েশ্চার করে ও চুলের ঘনত্ব বাড়িয়ে চুলকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে। আর নারকেল তেল আদিযুগ হতে চুলের বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু মজার ব্যাপারহলো, আমরা মনে করি এই অনিয়ন অয়েলটি বানানো খুব বেশী ঝামেলার কাজ। তাই চুলের যত্নে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান আমরা এড়িয়ে যাই। কিন্তু এই তেল তৈরি করা সবচাইতে বেশি সহজ। আসুন তাহলে এই সহজ তেলটি বানানোর উপায় জেনে নিই।

উপকরণঃ 

একটি পেঁয়াজ, নারিকেল তেল।

যেভাবে তৈরি করবঃ

১. প্রথমে পেঁয়াজটি ছোট ছোট কয়েক টুকরো করে কেটে নিই। 

২. তারপর ব্লেন্ডারে আধাকাপ ,নারিকেল তেল মিশিয়ে ব্লেন্ড করে পেঁয়াজের একটি পেস্ট তৈরি করুন। 

৩. এবার একটি সসপ্যানে পেঁয়াজের পেস্টটি ঢেলে তাতে আরও আধা কাপ নারিকেল তেল যোগ করুন এরপর চুলায় একদম ছোট আঁচে ১০-১৫ মিনিটের জন্য নাড়তে থাকুন। পেঁয়াজের রং হালকা বাদামী হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৪. একটি ছাঁকনির সাহায্যে থেকে কাচের জারে সংরক্ষণ করুন। 

৫. গোসল করার আগে ৫-১০ মিনিটের জন্য মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এরপর ৩0 মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই তেলটি দিয়ে মাসাজ করুন।

সর্বোপরি, চুলের বৃদ্ধির জন্য শুধুমাত্র হেয়ার অয়েল দিয়ে মাসাজ করলে হবে না। পাশাপাশি চুলের যত্নে- নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া, অধিক পরিমাণে পানি পান করা, নিয়ম মেনে চলাও জরুরি। মনে রাখবেন চুল কখনো রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধবেন না। এর ফলে, মাথায় রক্ত সঞ্চালন কমে যায় আলতো করে চুলের ক্লিপ দিয়ে চুল বাঁধার চেষ্টা করবেন। চেষ্টা করুন চুলে কোন রকম কেমিক্যাল ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং কোন প্রকার ওভার স্টাইলিং না করা।