চালের গুড়া এবং হলুদ আলাদা আলাদাভাবে ত্বকের দাগ দূর করে ত্বক ফর্সা করতে অত্যন্ত কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান । আর এই দুইটি উপাদানের সাথে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান মিশিয়ে ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতা আরো বেড়ে যায় ।
আজ আমি আপনাদের সাথে চালের গুঁড়া এবং হলুদের এমন একটি ফেসপ্যাক শেয়ার করব যা ত্বকের দাগ দূর করে খুব দ্রুত ত্বক ফর্সা করবে ।
চলুন চালের গুঁড়া এবং হলুদের ফেসপ্যাকটি কিভাবে তৈরি করতে হবে তা দেখে নিই ।
চালের গুঁড়া এবং হলুদের ফেসপ্যাকঃ
- ত্বক ফর্সাকারী এই ফেসপ্যাকটি তৈরিতে যা যা লাগবেঃ
- 2 টেবিল চামচ চালের গুড়া।
- আধা চা-চামচ কাঁচা হলুদের গুড়া।
- 2 চা চামচ অ্যালোভেরা জেল।
- পরিমাণ মতো তরল দুধ।( পেস্ট যেন মুখ থেকে গড়িয়ে পড়ে না যায় সে পরিমাণে)
চালের গুঁড়া এবং হলুদের ফেসপ্যাক তৈরির প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে দুধ ছাড়া অন্যান্য সব উপকরণ নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
এরপর পরিমান মত কাঁচা তরল দুধ দিয়ে ভালোভাবে গুলিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন।
তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে ত্বক ফর্সাকারী অত্যন্ত কার্যকরী এই ফেসপ্যাকটি।
ফেসপ্যাকটি ত্বকে ব্যবহারের উপকারিতাঃ
- ত্বক গভীর থেকে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলবে।
- হলুদের গুড়ার নির্যাস ত্বকের গ্লামার বৃদ্ধি করবে।
- দুধ এবং হলুদের মিশ্রণে গায়ের রঙ দুধে আল্তা হয়ে উঠবে।
- ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ ব্রন মেছতা সানবার্ন বলিরেখা ইত্যাদি দূর করবে।
- সম্পূর্ণ ন্যাচারাল উপায়ে ত্বক কে ময়েশ্চারাইজ করবে ।
- সর্বোপরি স্থায়ীভাবে কালো ত্বক ফর্সা করে তুলবে।
ফেসপ্যাক ত্বকে ব্যবহারের প্রক্রিয়াঃ
স্ক্রাবিংঃ
ফেসপ্যাক ব্যবহারের পূর্বেই প্রথমে ত্বক স্ক্রাব করে নিতে হবে। এর জন্য আপনি আপনার ত্বকের সাথে মানানসই যেকোন স্ক্রাবার ব্যবহার করতে পারেন।
অথবা টমেটো বা লেবু স্লাইস করে কেটে নিয়ে তার উপরে চিনির আস্তর দিয়ে সম্পূর্ণ মুখে ঘষে ঘষে স্ক্রাব করে নিতে পারেন।
আপনি চাইলে কাঁচা তরল দুধ দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে পারেন।
ফেসপ্যাক এপ্লাইঃ
এ পর্যায়ে ত্বকে ফেসপ্যাক এর মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে। পরিষ্কার রুমাল তুলা বা স্ক্রাবারের সাহায্যে ফেসপ্যাক এর মিশ্রণ সম্পূর্ণ মুখে ভালভাবে লাগিয়ে নিন।
এবার স্ক্রাবার বা আঙুলের সাহায্যে সম্পূর্ণ মুখে ক্লক এবং এন্টি ক্লক স্টাইলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন। তিন থেকে পাঁচ মিনিট আলতো ভাবে ম্যাসাজ করতে থাকোন।
এরপর 20 থেকে 25 মিনিট মিশ্রণটি শুকানোর সময় দিন।
ময়শ্চারাইজিংঃ
মিশ্রণ সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে একটি ভেজা রুমাল নিয়ে প্রথমে মুখ ঢ়েকে নিন।
এরপর কুসুম গরম পানিতে তুলা ভিজিয়ে আস্তে আস্তে ঘষে ঘষে মিশ্রন গুলো তুলে নিন।
এবার ঠাণ্ডা পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
সবশেষে আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
বিঃদ্রঃ
- যাদের ত্বক অতি সংবেদনশীল তারা লেবুর পরিবর্তে টমেটো ব্যবহার করবেন।
- ত্বকে ফেসপ্যাক লাগানো অবস্থায়ই রোদে, গরম স্থানে, এবং ধুলাবালি যুক্ত স্থানে যা বেন না।
- ফেসপ্যাক তৈরীতে ব্যবহৃত কোন উপকরণ আপনার ত্বকের জন্য এলার্জি হলে তা পরিহার করুন।
- শিশুদের ত্বকের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- ফেসপ্যাক এর ব্যবহৃত সকল উপকরণ ভেষজ উদ্ভিদের দোকানে পাওয়া যাবে।
- সুস্থ ,সুন্দর এবং আকর্ষণীয় ফর্সা ত্বক পেতেঃ-
- দৈনিক 3 থেকে 4 লিটার পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।বাহিরে যাওয়ার সময় ছাতা ব্যবহার করুন।
- ধুলাবালি যুক্ত স্থান পরিহার করুন।
- বাহিরে থেকে এসেই মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
- কেমিক্যাল জাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
উপরে আলোচিত ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে অন্তত দুবার ব্যবহারে আপনার কালো ত্বক হয়ে উঠবে সম্পূর্ণ উজ্জ্বল , ফর্সা এবং লাবণ্যময়ী । তাই পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন সুস্থ সুন্দর এবং উজ্জ্বল ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন ।