চন্দনের অসাধারণ কিছু উপকারিতা ও গুণাগুণ

0
461
চন্দনের উপকারিতা ও গুণাগুণ

কালের পরিবর্তনে পৃথিবীতে অনেক ধরনের আবিষ্কার লক্ষ করা যায়। আমাদের উপকারের জন্য মানুষ সৃষ্টির আগে স্রষ্টা প্রকৃতিতে এমন কিছু উপাদান আমাদের জন্য রেখেছে যা আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই স্রষ্টা ও প্রকৃতির কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ঠিক সেরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে চন্দন গাছ। 

চন্দন গাছ কি???

বিভিন্ন ধর্মে চন্দন গাছ কে প্রবিত্রতার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মে দেখা যায়, বিভিন্ন পূজা-অর্চনায় চন্দনের ফোটা দিয়ে তারা তাদের উৎসব উদযাপন করে থাকে। কিন্তু এটা ছাড়াও চন্দনের আরো অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। চন্দন গাছ মাঝারি সাইজের একটি গাছ।

বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় চন্দন গাছের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চন্দন গাছের বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ করা হচ্ছে। যেহেতু চন্দন গাছ আমাদের অনেক বেশি উপকার করে থাকে, এর ব্যাপক চাহিদা সারাবিশ্বে দেখা যায়।

চন্দন গাছের উপকারিতাঃ

চন্দন গাছের উপকারিতা বলতে গেলে বলে শেষ করা যাবে না। বিশেষ করে কয়েক ধরনের চন্দন দেখা যায়। যেমন, ভারতীয় চন্দন, লাল চন্দন, শ্বেত চন্দন,ও  মলয় গিরি চন্দন।

প্রত্যেক প্রকারের চন্দন এর গাছ ১৫-২০ ফুটের বেশি লম্বা হয় না।  এই গাছ দ্রুত বাড়ে না বলে এই গাছের বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান খুব একটা হয়ে ওঠে না। যদিও এই গাছের চাহিদা অনেক কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এখনো চন্দন গাছ হাতের নাগালের বাইরে। 

কারণ প্রচুর পরিমাণে চন্দন গাছের উৎপাদন নেই বলে এখনো এর বাজার মূল্য অনেক। আমাদের জীবনে চন্দন গাছ কি কি উপকার করে থাকে তা আপনাদেরকে বিস্তারিতভাবে জানাচ্ছি। 

ব্যাথা নাশক প্রতিষেধক হিসেবে চন্দন এর উপকারিতা ও গুনাগুনঃ 

চন্দনের মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের যেকোনো ব্যাথা উপশম করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে। কারণ এর মধ্যে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের ব্যথা কমিয়ে ফেলে খুবই দ্রুত আরাম এনে দেয়। 

তাই প্রাচীনকালে দেখা যেত কোন জায়গায় ব্যথা পেলে বা ফুলে গেলে সে জায়গায় চন্দনের প্রলেপ দেওয়া হতো। সুতরাং শরীরের ব্যথা উপশম করতে চন্দনগুঁড়োর উপকারিতার শেষ নেই।

ক্যান্সার প্রতিরোধে চন্দন তেলের উপকারিতাঃ 

চন্দন এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের স্কিনে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে আসে। কারণ এর মধ্যে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের শরীরকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে অবশ্যই আপনি চন্দনের তেল  শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দিতে পারেন। 

স্যানিটাইজার হিসাবে চন্দনের উপকারিতাঃ

চন্দন শুধু যে আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচায় তা কিন্তু নয়। এটি আমাদের পরিষ্কারক বা এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। যার কারণে চন্দন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাবান, পাউডার প্রভৃতি তৈরি করা হচ্ছে এবং এর চাহিদা আমাদের দেশের সাথে সাথে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। তাই অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে চন্দনের উপকারিতা অনেক।

পেটের আলসার দূরীকরণে চন্দন গাছের উপকারিতাঃ

একটা গবেষণায় উঠে এসেছে আমাদের পাকস্থলী তে যে ঘা হয় যাকে আমরা আলসার বলে থাকি, এটা দূরীকরণে চন্দনের উপকারিতা অনেক। কারণ চন্দন এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের ভেতরে গিয়ে কাজ করে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে গ্যাস নিঃসরণের বাধা দেয়। তাই পেটের আলসার দূরীকরণে চন্দনের উপকারিতা রয়েছে।

এজন্য এক কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ ছন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে যদি আপনি সকালে খালি পেটে সেবন করতে পারেন আলসারের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। 

ত্বকের যত্নে চন্দনের উপকারিতাঃ

সারা বিশ্বে চন্দনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ত্বকের যত্নে চন্দনের ব্যবহারে। আমাদের ত্বকের স্নায়ুগুলোকে সবসময় উজ্জীবিত রাখতে এবং স্কিনের বলিরেখা দূর করতে ও ত্বক ফর্সা করতে চন্দন গুঁড়োর যেন কোনো বিকল্প নেই। 

রূপচর্চার প্রত্যেকটা প্রসাধনীতে চন্দন গুঁড়োর ব্যবহার যেন অনস্বীকার্য। তাই ত্বকের যত্নে চন্দনের ব্যবহার আমাদের অনেক বেশী উপকৃত করে থাকে। 

সুতরাং বন্ধুরা, এতক্ষণ ধরে আপনাদের চন্দন এর বিভিন্ন উপকারের কথা বললাম। চেষ্টা করবেন নিজেদের সমস্যা অনুযায়ী চন্দনের গুঁড়ো বা চন্দন গাছের পাতা অথবা চন্দন গাছের বাকল ব্যবহার করে নিজেদের সমস্যার সমাধান করবেন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here