মাত্র ৩০ মিনিটে দুধে আলতা গায়ের রঙ পেতে কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল করার পদ্ধতি

মানুষ মাত্রই সৌন্দর্যের পূজারী।  সুন্দর এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে মানুষ বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা এবং প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করে থাকে। রূপচর্চায় বহুকাল ধরেই নারী-পুরুষ সবাই বিভিন্ন ধরনের ফেসিয়াল ব্যবহার করে আসছেন। দুধে আলতা গায়ের রঙ পেতে বিভিন্ন ধরনের ফেসিয়াল এর মধ্যে কাচা তরল দুধ এবং  হলুদের ফেসিয়ালটি অত্যন্ত কার্যকরী। তবে আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন । যারা সময় এবং সুযোগের অভাবে পার্লারে গিয়ে কাচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল করে নিতে পারেন না। তাই বাড়িতে বসেই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে কিভাবে কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালটি করে দুধে আলতা গায়ের রং পেতে পারেন তার বিস্তারিত বর্ণনা  নিয়েই এই আলোচনাটি সাজিয়েছি। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল করার পদ্ধতি।

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল করার পদ্ধতি

ক্লিনজিংঃ

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালের প্রথম ধাপ হচ্ছে ক্লিনজিং বা ত্বক পরিষ্কার করা।

প্রথমে আপনার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

এবার পরিষ্কার কাচা তরল দুধ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

 স্ক্রাবিংঃ

এবার একটি লেবু ফালি করে কেটে তাতে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে এবং ১ চা চামচ এলোভেরা জেল দিয়ে সম্পূর্ণ মুখে ভালোভাবে স্ক্রাব করে নিন।

তিন থেকে পাঁচ মিনিট ওভাবে স্ক্রাপ করার পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন।

স্টিমিংঃ

 কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালের দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে স্টিমিং।

প্রথমে একটি পাত্রে পানি ভালোভাবে গরম করে নিয়ে একটি গামলা তে নিন।

বার গামলায় পানিতে মুখ উপর করে দিয়ে কান্নার পানি থেকে ওঠা বাষ্প যেন মুখে লাগে সেভাবে অপেক্ষা করুন।

একটি পরিষ্কার তোয়ালে আপনার মাথার উপর দিয়ে ঘুরিয়ে  গামলার দুপাশে ছড়িয়ে দিন।

এভাবে 10 থেকে 15 মিনিট অথবা যতক্ষণ বাষ্প উঠতে থাকে ততক্ষণ মুখে লাগান।

মাসেজিংঃ

দুধে আলতা গায়ের রং পেতে কাঁচা দুধ কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালের তৃতীয় ধাপ হচ্ছে মাসেজিং।

এ পর্যায়ে প্রথমে 2 টেবিল চামচ চালের গুঁড়া 1 টেবিল-চামচ অ্যালোভেরার জেল,  এক চা চামচ কাঁচা হলুদ, একটি পরিষ্কার পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে গুলিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে নিন।

মুখে তুলা অথবা মুখের ব্রাশের সাহায্যে সম্পূর্ণ মিশ্রণটি ভালোভাবে স্ক্রাব করে লাগিয়ে নিন। 

স্ক্রাবটি সম্পূর্ণ মুখে ক্লক এবং এন্টি ক্লক স্টাইলে ভালভাবে মাসাজ করুন 5 থেকে 7 মিনিট।

এরপর 15 থেকে 20 মিনিট ভালোভাবে শুকানোর সময় দিন।

তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের মাস্কঃ

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালের চতুর্থ ধাপ হচ্ছে তরল দুধ এবং হলুদের মাস্ক এপ্লাই করা।

প্রথমেই তরল দুধ এবং হলুদের মিশ্রণে একটি মাস্ক তৈরি করে নিতে হবে।

2 টেবিল-চামচ কাঁচা তরল দুধ 1 চা-চামচ কাঁচা হলুদের গুঁড়া, 2 টেবিল চামচ চন্দন পাউডার। একটা সময় বিটরুটের রস, সাথে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে প্রথমে একটি মাস্ক তৈরি করে নিন।

এবার তৈরিকৃত মাস্ক টি সম্পূর্ণ মুখে ভালোভাবে স্ক্রাব করে লাগিয়ে নিন।

তিন থেকে পাঁচ মিনিট ত্বককে ভালোভাবে স্ক্রাব করুন।

শুকানোর জন্য 25 থেকে 30 মিনিট সময় দিন।

এরপর কুসুম গরম পানিতে কঠন ভিজিয়ে মাস্ টি ঘষে ঘষে ভালোভাবে তুলে নিন।

তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন।

ময়েশ্চারাইজিংঃ

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালের পঞ্চম এবং সব শেষ ধাপ হচ্ছে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে নেয়া।এ পর্যায়ে আপনার ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করার জন্য। 2 চা চামচ এলোভেরা জেল সাথে একটা চামচ অপরিশোধিত মধু লাগিয়ে ত্বকে ভালভাবে মালিশ করে নিন।

আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের মশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। 

এছাড়াও ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে নিতে এলোভেরা এবং মধু পেস্ট এর সাহায্য নিতে পারেন।

উপরে উল্লেখিত পাঁচটি ধাপ অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসেই নিজেই। কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল করে নিতে পারেন।

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালের উপকারিতাঃ

দ্রুত সময়ে আপনার ত্বককে সম্পূর্ণ ফর্সা এবং উজ্জ্বল করে তুলবে।

আপনার ত্বক দুধে-আলতা রঙ ধারণ করবে।

ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর হবে।

ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর হবে।

ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

ত্বক কোমল মসৃণ এবং আকর্ষনীয় হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

 আপনার ত্বক অতিরিক্ত সেনসিটিভ হলে লেবুর রস ব্যবহারের পরিবর্তে অর্ধেক পাকা টমেটো ব্যবহার করবেন।

 কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল স্ক্রাব করার সময় ত্বকে অতিরিক্ত প্রেসার দিবেন না।

 ফেসিয়ালের পর রোদে বা গরম স্থানে যাবেন না।

  ফেসিয়াল করার পর কোন ধরনের কেমিক্যালযুক্ত  মেকআপ থেকে বিরত থাকুন অন্তত 24 ঘন্টা।

  ফেসিয়ালের পর মুখে হাত দেয়ার সময় হাত পরিষ্কার করে নিবেন।

  ফেসিয়ালের পর কেমিক্যালযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন।

  ফেসিয়ালের পর ব্রণ অথবা ত্বকের দাগ খোঁচাবেন না।

কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল এর কোন উপাদান আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক হলে সেটির ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

ভালো ফলাফল পেতে চাইলে মাসে অন্তত দুবার কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়ালটি করে নিন।

ঘরে বসে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে নিজের রংকে উজ্জ্বল ফর্সা এবং দুধে-আলতা গায়ের রং চাইলে। কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিসমূহ অনুসরণ করে কাঁচা তরল দুধ এবং হলুদের ফেসিয়াল ঘরে বসেই করে নিন । হয়ে উঠুন দুধে আলতা গায়ের রঙের অধিকারী।